ঢাকা, মঙ্গলবার ২৩, ডিসেম্বর ২০২৫ ১:৪৫:২০ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
‘সরকারকে অবশ্যই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে’ দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের ভিসা সেবা বন্ধ ঘোষণা প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিয়ে বৈঠক কলকাতায় বাংলাদেশ হাইকমিশন ‘না রাখতে’ দেওয়ার হুমকি শুভেন্দুর ২৭ ডিসেম্বর ভোটার হবেন তারেক রহমান দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে সোনা

ভেনাস-সেরেনার সাতকাহন

খেলাধুলা ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪.কম

আপডেট: ১২:২৪ পিএম, ১১ জুলাই ২০১৮ বুধবার

টেনিসের দুই রানী সেরেনা উইলিয়ামস আর ভেনাস উইলিয়ামস। এখনও দুই বোন দাপুটের সাথে খেলে যাচ্ছেন। টেনিসের ইতিহাসে একই পরিবারের দুই বোনের এরকম নজিড় অার নেই। তাদের এ খ্যাতির পিছনে পারস্পরিক ভালবাসা, শ্রদ্ধাই হল সবচেয়ে বড় মাধ্যম। নিজেদের তারা এক অপরের প্রতিযোগি নয় বরং সহসঙ্গী ভেবেই এগিয়ে যাচ্ছেন।

 

ভেনাসের বয়স ৩৮ আর সেরেনার বয়স ৩৬। সে হিসেবে ভেনাস সেরেনা থেকে ২ বছরের বড় হওয়ার কথা। কিন্তু সত্যিকার অর্থে দুজনের বয়সের পার্থক্য মাত্র ১৫ মাসের। রিচার্ড উইলিয়াম ও ওরেসেনা প্রাইসের কন্যাদয় হলেন ভেনাস ও সেলিনা। রিচার্ড ছিলেন লুইজিয়ানার একজন প্রাক্তন ভাগ চাষী। তিনি তার দুই মেয়ে ভেনাস এবং সেরেনাকে টেনিস খেলোয়াড় হিসেবে তৈরি করার ব্যাপারে ছিলেন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ এবং সবসময় চাইতেন, তার এই মেয়ে দু’টিকে সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছে দেয়ার জন্য। তাই ছোটবেলাতেই কোলের শিশু দুইটিকে নিয়ে গোটা পরিবার সহ রিচার্ড সংসার পাতলেন ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জলেসের শহরতলি কম্পটন অঞ্চলে।

 

সেরেনা আর ভেনাসের টেনিসের হাতেখড়ি হয়েছিল বাবার কাছ থেকেই। বাবা এবং দুই মেয়ের ঘাঁটি ছিল বাড়ি থেকে কিছুটা দূরের এক টেনিস কোর্টে। যখন ভেনাস পাঁচে ও সেরেনা তিন বছর পেরিয়ে, সে সময় তার বাবা টেনিসের বই আর নির্দেশ সংক্রান্ত ভিডিও টেপ কিনে দিন-রাত টেনিস খেলার ধরন এবং নানা নিয়মকানুন সম্পর্কে পড়াশোনা করতেন। শুধু রিচার্ডই নন, সেরেনার মা-ও সঙ্গী ছিলেন এই কাজে। তাদের লক্ষ্য ছিল একটাই, তাদের মেয়ে ভেনাস ও সেরেনাকে নিজস্ব নিজেদের তত্ত্বাবধানে তৈরি করবেন।


যেমন বাবা, তেমনই ছিল দুই মেয়ে। যেখানে অন্যমেয়েরা খুনসুটি করে সময় কাটাতো সেখানে সেরেনার শৈশব কেটেছে বোন ভেনাসের সঙ্গে টেনিস কোর্টে। একনাগাড়ে তিন বছর ধরে প্রতিদিন নিয়ম করে বাবার কাছে টানা দু’ঘণ্টা প্রশিক্ষণ নিত দুই বোন।

 

রিচার্ড উইলিয়ামস সিদ্ধান্ত নিলেন, মেয়েদের তিনি আর জুনিয়রদের দলে অংশগ্রহণ করাবেন না। তিনি মেয়েদের উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য কোচের ব্যবস্থা করলেন।

 

খেলার সাথে সাথে পড়াশোনায়ও দুই বোন কোনো কমতি রাখলেন না। টেনিসের ফাঁকে ফাঁকেই হাই স্কুলের গণ্ডি পেরুলেন। সব মিলিয়ে দুই বোনের টেনিস ক্যারিয়ারে প্রতিষ্ঠা লাভ এবং সাফল্যের শিখরে উঠার প্রাথমিক সিঁড়ি রচিত হয়েছিল কৈশোরেই। আর তারা দুজন ছিলেন এক অপরের ছায়াসঙ্গী।

 

১৯৯৯ সালে ঘটে গেল প্রথম ঘটনা। ইউ এস ওপেন আসরে দুই বোন সেরেনা আর ভেনাস প্রথম একসাথে ফাইনালে মুখোমুখি হলেন। টেনিস ভক্তদের অধীর আগ্রহ, দু’বোনের টেনিস যুদ্ধে কে জিতবে গ্র্যান্ড স্লাম? অবশেষে জয়ের মুকুট শোভা পেল সেরেনার ঝুলিতেই। সেটিই প্রথম সেরেনার গ্র্যান্ড স্লাম পদক।

 

দুই বোনের মুখোমুখি লড়াইয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভেনাসের বিপক্ষে লড়াইয়ে জয়ের হাসি থেকেছে সেরেনার ঠোঁটেই। দুই বোন বেড়ে উঠেছেন একসঙ্গে, তাই প্রতিপক্ষ সম্পর্কে খুব ভালো জানা বড় উইলিয়ামসের, ‘সেরেনা যেভাবে টেনিস খেলে, সেটা আসলে অসম্ভব। ওর বলে আঘাত করা কিংবা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা, সত্যি অসাধারণ। ওর বিপক্ষে লড়াই করাটা স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতো।’


অন্যদিকে প্রতিপক্ষ হিসেবে ভেনাসকে পেলে খুশিই হয় সেরেনা। ‘ভেনাসের জন্য আমি গর্বিত। ও আমার অনুপ্রেরণা, আমার বড় বোন। ওকে জিততে দেখলে আমি ভীষণ খুশি হই। ও আমরা সবচেয়ে কঠিন প্রতিপক্ষ, ভেনাস আমাকে যতবার হারিয়েছে, ততবার কেউ হারাতে পারেনি।’


দুই বোনের ডকুমেন্টারী ছবি ভেনাস এন্ড সেরেন মুক্তি পায় ২০১২ সালে। যেখানে দুই বোন সহ পুরো পরিবারের চিত্র উঠে আসে। প্রকাশ পায় কত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দুই বোন এ পর্যায়ে এসেছে। ছবিটি ব্যাপক আলোচিত হয়।

 

দুই বোন টেনিস খেলেন এক টার্গেট নিয়ে। শিরোপা যাতে উইলিয়ামস পরিবারই পায়। যে কোন ম্যাচেই দুই বোন এই চিন্তা করেই মাঠে নামে। তাই তো দুই বোনের সাফল্যের পাল্লাই সমান। তাতে ১ গ্রামও এদিক ওদিক নেই।