ঢাকা, মঙ্গলবার ২৩, ডিসেম্বর ২০২৫ ৩:৩৩:৫২ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
‘সরকারকে অবশ্যই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে’ দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের ভিসা সেবা বন্ধ ঘোষণা প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিয়ে বৈঠক কলকাতায় বাংলাদেশ হাইকমিশন ‘না রাখতে’ দেওয়ার হুমকি শুভেন্দুর ২৭ ডিসেম্বর ভোটার হবেন তারেক রহমান দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে সোনা

বিশ্ব ফুটবলের উন্নয়নে ফিফা মহাসচিব ফাতমা

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪.কম

আপডেট: ০২:২৫ এএম, ২৯ মে ২০১৮ মঙ্গলবার

ফুটবল-জ্বরে ভুগছে গোটা বিশ্ব। আর মাত্র কয়েকটা দিন, তারপরেই শুরু হয়ে যাবে বাঙালীর রাত জেগে খেলা দেখার পালা। এই প্রথমবারের মত কোনো নারী মহাসচিবের সময়ে বিশ্বকাপ ফুটবল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বলছি ফিফা মহাসচিব ফাতমার কথা। পুরো নাম ফাতমা সামবা দিউফ সামৌরা।

 

বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ প্রশাসক সংস্থা ফিফার বর্তমান মহাসচিব তিনি। ফিফার ইতিহাসে প্রথম নারী মহাসচিব। দীর্ঘ ১১২ বছর পর ফিফার মত পুরুষ অধ্যুষিত একটি প্রতিষ্ঠানে প্রথম নারী হিসেবে নিজেকে আসীন করেছেন ২০১৬ সালে। এ অর্থে ইতিহাস গড়েই পদে বসেছেন ফাতমা। বিশ্ব ক্রীয়াঙ্গনের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নারী হিসেবে ভাবা হচ্ছে ৫৬ বছর বয়সী ফাতমাকে।

 

ফিফার মতো একটি বড় এবং জনপ্রিয় সংগঠনের উচ্চপদে নারী হয়েও দায়িত্ব পাওয়া ফাতমা স্বচ্ছতা আর জবাবদিহিতা দিয়ে ইতিমধ্যে জনপ্রিয়তা লাভ করেছেন। বর্তমানে বিশ্বকাপ আয়োজন ও ফুটবলের দুর্নীতিগ্রস্থ সংস্থাগুলোর সংস্কারকাজ তত্বাবধায়ন নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

 

সম্প্রতি বিবিসিকে এক সাক্ষাৎকারে ফাতমা বলেন, নারী হিসেবে নিজেকে শীর্ষ পর্যায়ে প্রতিষ্ঠিত করতে প্রতিদিন আপনাকে প্রমাণ করতে হবে আপনি এই অবস্থানের যোগ্য কিনা। একজন পুরুষের দ্বিগুণ কাজ করতে হবে আপনাকে। কোন ভুল করার সুযোগ নেই আপনার।

 

মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে স্বার্থগত দ্বন্ধে জড়ানোর অভিযোগ আনা হয়। কিন্তু ফিফা সেই অভিযোগ নাকচ করে দেয়। অনেকেই মনে করেন ফিফার মত সংস্থায় একজন কৃষাঙ্গ নারী নেতৃত্বস্থানীয় পদে থাকা দরকারই বা কী? কিন্তু বৈচিত্রকে নিজের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন ফাতমা।

 

যে ফিফায় শতকরা ৩২ ভাগ ছিল নারী কর্মী সেখানে ফাতমা যোগদানের পর এখন সেই পার্সেন্ট হয়েছে ৫০ ভাগ। যেহেতু নিজে একজন নারী তাই নারীদের ফুটবল আরও উন্নত করতে হবে বলে মনে করেন তিনি।

 

এ বিষয়ে তিনি বলেন, এখানে আসার পর পুরুষ বিভাগে তারকাখ্যাতি, অর্থ সবই দেখেছি। নারীদের ফুটবল নিয়ে আলাদা কোন গুরুত্ব নেই। নারীদের ফুটবলকে আলাদা গুরুত্ব দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে আমরা কোন ভুল করতে চাই না। সর্বশেষ, ফাতমা মনে করেন নারীদের সম্পর্কে প্রচলিত ধ্যান-ধারণার অবসান হয়েছে।

 

ফাতমার জন্ম ১৯৬২ সালে। জন্মস্থান সেনেগাল। সামবা লিয়ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি এবং স্প্যানিশ সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এ ছাড়া তিনি ফ্রান্সের একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন।

 

তার কর্মপ্রতিষ্ঠান এখন বিশ্ব ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। যদিও অতীতে কোনোভাবেই যুক্ত ছিলেন না ফুটবলের সঙ্গে। নারী হিসেবে সব সময়ই প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কাজ করে এসেছেন তিনি। ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত ফাতমা তিন সন্তানের জননী। কঠিন দায়িত্ব আর ব্যক্তিগত জীবনের কর্তব্য এ দুয়ের তালে ভালোভাবেই সামলে চলেছেন ফাতমা।

 

কর্মজীবনে কূটনৈতিক দায়িত্বে বরাবরই সফলতার প্রমাণ দিয়েছেন তিনি। ১৯৯৫ সালে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির কর্মকর্তা হিসেবে জাতিসংঘে কর্মজীবনের সূচনা করেন ফাতমা। আফ্রিকার মতো বৈরী দেশগুলোতে জাতিসংঘের মানবতার বার্তা নিয়ে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন সেনেগালের এ নারী প্রতিনিধি।

 

নাইজেরিয়া ছাড়াও আফ্রিকার ছয়টি দেশে জাতিসংঘের প্রতিনিধিত্ব করেছেন তিনি। জাতিসংঘে তার দায়িত্ব পালনের আগে ১৯৯৫ সালে তিনি ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামে কাজ করেন। তিনি ডব্লিউএফপি’র কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ হিসেবে ছয়টি দেশে কাজ করেছেন। দেশগুলো হল-রিপাবলিক অব জিবুতি, ক্যামেরুন, চাদ, গায়ানা, মাদাগাসকার এবং নাইজেরিয়া। তিনি ফ্রেঞ্চ, ইংলিশ, স্প্যানিশ এবং ইতালিয়ান ভাষায় সমানভাবে দক্ষ। সবশেষ জাতিসংঘের হিউম্যানিটারিয়ান কো-অর্ডিনেটর হিসেবে নাইজেরিয়ায় কাজ করেছেন।