ঢাকা, মঙ্গলবার ২৩, ডিসেম্বর ২০২৫ ৩:৩২:৫৮ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
‘সরকারকে অবশ্যই মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে’ দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের ভিসা সেবা বন্ধ ঘোষণা প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিয়ে বৈঠক কলকাতায় বাংলাদেশ হাইকমিশন ‘না রাখতে’ দেওয়ার হুমকি শুভেন্দুর ২৭ ডিসেম্বর ভোটার হবেন তারেক রহমান দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে সোনা

সফল কুস্তিগীর শিরিন ব্যবসাতেও সফল

অনলাইন ডেস্ক | উইমেননিউজ২৪.কম

আপডেট: ০৯:৫৫ পিএম, ১ জুন ২০১৮ শুক্রবার

একটা সময় ছিল যখন বাংলাদেশে ক্রীড়াঙ্গনে নারীদের খুব বেশি একটা দেখা যেত না। কিন্তু সময় বদলেছে। বদলেছে সে চিত্র। আজ পুরুষের পাশাপাশি সমান তালেই ক্রীড়াঙ্গনে বিচরণ করছে নারীরা।তেমনই একজন শিরিন সুলতানা। ময়মনসিংহের মেয়ে শিরিন। একজন কুস্তিগীর। 

 

কথায় আছে যে রাধে সে চুলও বাধে। হ্যা, খেলাধুলার পাশাপাশি শিরিন বর্তমানে একজন সফল ব্যবসায়ী।খেলাধুলার মাঝেই ২০১৩ সালে পোলট্রি ব্যবসা শুরু করেন তিনি। সফলতার সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন শিরিন।

 

শিরিন বললেন, বাড়িতে আমাদের বেশকিছু জায়গা-জমি খালি ছিল। আমি একদিন ভাবলাম এখানে পোলট্রি ফার্ম করা যায়। শুরু করি ৩ হাজার ৬০০ মুরগি দিয়ে। এখন আছে ৩০ হাজারের বেশি। এখন প্রতিদিনই নতুন মুরগি জন্মাচ্ছে আর বিক্রি হচ্ছে। মাছ চাষেরও দুটি প্রকল্প আছে শিরিনের। তার ব্যবসায় প্রকল্পগুলোতে কাজ করছেন প্রায় ২০জন কর্মী। 

 

তিনি বলেন, মাছের আরও তিনটি প্রকল্প শুরু হবে কিছুদিনের মধ্যেই। অনেকটা জায়গা নিয়ে দেশি লেবু আর পেঁপে চাষ শুরু করেছি। খুব তাড়াতাড়িই ফলন পাওয়া যাবে।

 


শিরিন সুলতানা জানান, ২০০৪ সালে তার অগ্রজরা যখন রেসলিং শুরু করে, তখন হয়েছে নানা সমস্যা। কাজে বাধা দেয়ার চেষ্টা থেকে এমনকি স্টেডিয়াম ঘেরাও পর্যন্ত হয়েছে। কিন্তু তাঁরা থেমে থাকেননি। তাই আজ থেমে থাকা চলবে না তাঁরও। প্রথম দিকে পরিবারের মানুষদের কিছুটা আপত্তি থাকলেও তার সফলতার পাশে ছিলেন সবাই।

 

দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে একমাত্র তিনিই এসেছেন রেসলিংয়ে। অন্যরা ব্যবসায়ী। পরিবারে আর কেউ নেই রেসলিং অর্থাৎ কুস্তিতে। এমনকি পুরো ময়মনসিংহ বিভাগে তিনি ছাড়া আর কোন নারী নেই এই খেলায়। ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ার এই লড়াকু মেয়ে বারবার খেলার মাধ্যমে চমক দেখিয়েছেন দেশে-বিদেশে।

 


২০০৮-০৯ সময়টায় বদলে যায় শিরিনের জীবন। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে ‘ট্যালেন্ট হান্ট’ প্রতিযোগিতা থেকে মাত্র এক মাসের একটি প্রশিক্ষণ পান। এরপর শুধুই এগিয়ে চলা। ২০০৯ সালেই জাতীয় রেসলিং চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক জিতে নেন। এরপর ২০১৫ সাল পর্যন্ত টানা জিতে নিয়েছেন দেশ সেরার পদক।

 


কেবল রেসলিং নয় অন্য খেলাতেও নিজের প্রতিভা দেখিয়েছেন শিরিন সুলতানা। ২০১০-২০১৩ চার বার জাতীয় রোইয়িং চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক পেয়েছেন। ২০১৫ সালে জাতীয় মহিলা কাবাডিতে স্বর্ণপদক জেতেন। জাতীয় উশু চ্যাম্পিয়নশিপে রৌপ্যপদক পান ২০১০ ও ২০১১ সালে। ২০১৪ সালে জিতে নেন স্বর্ণপদক। অস্ট্রেলিয়ার গোল্ড কোস্টে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ কমনওয়েলথ গেমসে রেসলিংয়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন প্রতিভাবান এ ক্রীড়াবিদ।

 


দেশের মাটিতে জয়ের পাশাপাশি আছে বিদেশ বিজয়ও। দ্বিতীয় ইন্দো-বাংলাদেশ রেসলিং চ্যাম্পিয়নশিপে স্বর্ণপদক পান ২০১২ সালে। ২০১৩ সালে এশিয়ান রেসলিং প্রতিযোগিতায় পান ব্রোঞ্জ। এ ছাড়া এশিয়ান গেমস, এশিয়ান ইনডোর এবং মার্শাল আর্ট গেমস পুরস্কার, ইসলামিক সলিডারিটি গেমসসহ আরও অনেক আসরে পেয়েছেন পদক। প্রেসিডেন্ট আনসার মেডেল, ক্রীড়া লেখক সম্মাননা, হিউমান রাইটস সম্মাননা, মে দিবস সম্মাননাসহ আরও অনেক স্বীকৃতি পেয়েছেন শিরিন সুলতানা।



শিরিন সুলতানা বলেন, অকে দিন ধরেই ভেবেছি খেলাধুলার পাশাপাশি আয়মূলক কিছু করা দরকার। করতে পেরেছি। সফলও হচ্ছি। পরিশ্রম করলে সফল হওয়া যায় এটি আমি খেলাধুলা এবং আমার ব্যবসা দিয়ে শিখেছি।

 

তিনি আরো বলেন, ইচ্ছে থাকলে বাংলাদেশের নারীরা সহজেই ব্যবসার মাধ্যমে উদ্যক্তা হতে পারে। রাখতে পারে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে অবদান।

সূত্র : বাসস।